সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধক এইচপিভি টিকা উপলক্ষে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (৯ অক্টোবর’২৪) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভা কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. এস.এম সাখওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ শরীফ নেওয়াজ। বক্তব্য দেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মইনুুল ইসলাম, দেবহাটা থানার এসআই সেলিম রেজা, দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর খায়রুল আলম, উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার আজহারুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার মিজানুর রহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার আজিজুর রহমান, নওয়াপাড়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার সুপার আবু সাঈদ, দক্ষিণ সখিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল ইসলাম, উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি হাফেজ আব্দুস সত্তার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুল্লাহ গাজী, এমটি (ইপিআই) সালাউদ্দীন আহমেদ, আশার আলোর নির্বাহী পরিচালক আবু আব্দুল্লাহ আল আজাদ, সখিপুর ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার আবু রায়হান প্রমুখ।
কর্মশালায় বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার (সার্ভিক্যাল ক্যান্সার) ভাইরাস জনিত একটি প্রাণঘাতী প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। এই রোগ বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুতে দ্বিতীয়। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত রক্তস্রাব, শারীরিক মিলনের পর রক্তপাত, মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর, তলপেট, উরুতে ব্যাথা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। তবে বাল্যবিবাহ, ঘন ঘন সন্তান প্রসাব, একাধীক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী, এইডস রোগী, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এমন নারীরা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই কিশোরী বয়সে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) টিকা নিলে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নয় এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। এইচপিভি টিকা নেয়ার জন্য নির্দিষ্ট তারিখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অথবা স্থায়ী বা অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে আসতে হবে।
আরো জানানো হয়, আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ১৮ দিনব্যাপী দেবহাটায় টিকা দান কর্মসূচি পালিত হবে। টিকা পেতে আগ্রহী সবাইকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে।
www.vaxepi.gov.bd এই ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা গ্রহণ করা যাবে। এইচপিভি টিকা পাওয়ার যোগ্য ছাত্রী বা কিশোরীরা বিদ্যালয়, নিকটস্থ টিকা কেন্দ্র এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে টিকা নিতে পারবে।
রেজিস্ট্রেশনকৃতরা নিজ এলাকা ছাড়াও দেশের যে কোন স্থান থেকে টিকা নিতে পারবে। তবে এইচপিভি টিকা অত্যান্ত নিরাপদ। যা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত। তারপরও টিকার স্থানে লালচে ভাব বা ব্যাথা বা ফুলে যাওয়া হলে এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। কোন ধরণের ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই। ইতোপূর্বে গাজীপুর, ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে এই টিকা প্রদানে কোন প্রকার সমস্যা দেখা যায়নি। টিকা দেয়ার পর যে কোন সমস্যা বা অসুবিধা হলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকর্মীকে খবর দিতে হবে। প্রয়োজনে ছাত্রী বা কিশোরীকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। টিকা নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে সরকার সবধরণের চিকিৎসার খচর বহন করবে। এইচপিভি টিকা দেয়া শেষ হলে টিকা কার্ডটি যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। ভবিষ্যতে বিদেশযাত্রা সহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা এবং টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ টিকা কার্ডটি প্রয়োজন হতে পারে বলেও জানানো হয়।