সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা গ্রামের যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন লাকীসহ তার তিন ভাইয়ের বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আলাউদ্দিন লাকীর স্ত্রী রেবেকা সুলতানা বাদি হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের নামে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে আগামি ২৮ অক্টোবরের মধ্যে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন, আশাশুনির শ্রীউলা গ্রামের আব্দুল হাকিম সরদারের ছেলে শামীম রেজা (রাজু), একই গ্রামের আমির আলী সরদারের ছেলে মফিজুল ইসলাম, ফজলুর রহমানের ছেলে মোশাররফ হোসেন মজনু, মোক্তার মাসুদ আবেদীন মণ্টু, খালিদ হোসেনের স্ত্রী মোস্তফা, মোশাররফ হোসেন মজনুর ছেলে রুছনাথ ও আফ্রিদ, বদর গাজীর ছেলে মিনাল গাজী, নজরুল ইসলাম সরদারের ছেলে ফারুক সরদার, ফারুক সরদারের ছেলে তৈয়বুর রহমান, মহিরউদ্দিন সরদারের ছেলে নজরুল ইসলাম, শফিকুল সরদারের ছেলে রণি সরদার, কুদ্দুস সরদারের ছেলে আক্তারুজ্জামান রিণ্টু, নজরুল সরদারের ছেলে রানা সরদার, আজিবর গাজীর ছেলে বাবু গাজী, করিম সরদারের ছেলে রহমত সরদার, ইয়াছিন গাজীর ছেলে আসিফ গাজী, মহিরুদ্দিন সরদারের ছেলে মোস্তফা সরদার, মোস্তফা সরদারের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, শফিকুল সরদারের ছেলে ছোট, খোকন সরদারের ছেলে শরিফুল সরদার, ইসমাইল সরদারের ছেলে কামরুল ইসলাম কামু, মহিরউদ্দিন সরদারের ছেলে তনজুরুল সরদার ও শফিকুল সরদার, মোক্তার মাসুম আবেদীন মণ্টুর ছেলে মাসুম, বকচরা গ্রামের লোকমানের ছেলে আলমগীর ও আল আমিন. একই গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইসমাইল, নাসিমাবাদ গ্রামের মফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল মজিদ গাজী, গাজীপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে মাহাবুব মোল্লা ও কালিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সিরাজুল গাজীর ছেলে মধু গাজী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শ্রীউলা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন লাকি, তার ভাই সালাউদ্দিন ইউসুফ ও নাসিরউদ্দিন একই বাড়িতে বসবাস করতেন। গত ৫ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পরদিন ৬ আগষ্ট বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক আবু হেনা শকিল এর পেটুয়া বাহিনীর সদস্য বিএনপি নেতা শামীম রেজা ওরফে রাজু, ডাবলু হত্যা মামলার আসামী মজনু ও মন্টুসহ ৫০ জনেরও বেশি আসামী লাকি’র বাড়িতে ঢুকে পড়ে। তারা লাকিসহ তার স্ত্রী মামলার বাদি রেবেকা সুলতানাসহ সন্তানদের মারপিট করে একে একে তিন ভাইয়ের ঘরে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা তিন ভাইয়ের আলমারি ভেঙে মাছ বিক্রির নগদ সোয়া পাঁচ লাখ টাকাসহ কমপক্ষে ২০ ভরি সোনার গহনা, জনতা ব্যাংকের চেক, জমির দলিলসহ মূল্যবান কাগজপত্র লুট করে। টিভি ফ্রিজসহ বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্র ভাংচুর করে। পরে তিন ভাইয়ের বসতঘরে প্রেট্রোল ছিটিয়ে আগুণ লাগিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়। পরে হামলাকারিরা নীচে উল্লাস করতে থাকে। এ সময় খবর দিয়ে ফায়ার ব্রিগড এলে তাদের উপস্থিতিতে হামলাকারিরা লাকির ২০০ বিঘা তার দুই ভাইয়ের ৫৮ বিঘা মাছের ঘের থেকে তিন লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করে। একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে বাদি ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়ি ছাড়তে হয়। পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় সে সময় মামলা করা সম্ভব না হলেও বর্তমানের অনুকুল পরিবেশ পাওয়ায় মামলা করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. শেখ বসির আহম্মেদ।