ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) এ কর্মরত পিচরেট শ্রমিকদের বয়সসীমা শিথিল করে শুন্য পদে চাকুরী স্থায়ীকরণ করার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানের পর কর্মবিরতি পালন করছেন গোপালগঞ্জ ওজোপাডিকো’র পিচরেট শ্রমিকরা।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর’২৪) সকালে ওজোপাডিকো লিমিটেড পিচরেট শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হারুনার রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাফায়েত হোসেনের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি ওজোপাডিকো লিঃ গোপালগঞ্জ জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট জমা দিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করেন। দেশের ২১ জেলায় পিচরেট শ্রমিকদের পক্ষ থেকে স্ব-স্ব জেলায় স্মারকলিপি প্রদান ও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন চলছে বলেও জানান তারা।
স্মারকলিপি প্রদানের পর গোপালগঞ্জ ওজোপাডিকো লিঃ কার্যালয়ের সামনে গোপালগঞ্জ জেলা শাখার পিচরেট শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি হারুনার রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাফায়েত হোসেন, সদস্য মোঃ তরিকুল ইসলাম, মোঃ সাইদুল ইসলাম, মোঃ কামরুল হাসান, মোঃ শিমুল খান, মোঃ মোছাব্বির প্রমূখ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করেন।
এসময় গণমাধ্যমকর্মীদেরকে গোপালগঞ্জ ওজোপাডিকো’র পিচরেট শ্রমিকরা বলেন, আমরা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, তথা বর্তমানে ওজোপাডিকো’র পিচরেট শ্রমিক হিসেবে বিগত ২০/২৫ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে কর্মরত থেকে মিটার রিডিং গ্রহণ, বিল প্রস্তুত, বিল বিতরণ ও ক্রেডিট পোস্টিং, বকেয়াধারী গ্রাহকের আঙ্গিনা চিহ্নিত করে বকেয়া আদায় এবং ননভ্যান্ডিং এর কাজ করা সহ অন্যান্য কাজ সততার সাথে পালন করে চলেছি। নির্ধারিত কাজের বিপরীতে মিটার রিডিং গ্রহণ জেলা পর্যায়ে প্রতিটি ৩.০০ টাকা ও থানা পর্যায়ে ৩.৫০ টাকা, বিল প্রস্তুত জেলা ও থানা পর্যায়ে প্রতিটি ১.৫০ ক্রেডিট পোস্টিং গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিটি ১.৪০ টাকা এবং বিল বিতরণ জেলা পর্যায়ে ২.২৫ টাকা ও থানা পর্যায়ে প্রতিটি ৩.০০ টাকা প্রদান করা হয়। উক্ত কাজের বিপরীতে আমরা ক্ষেত্র বিশেষ জনপ্রতি ৩,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০/ টাকা পর্যন্ত মাসিক মজুরি পাই। এই মজুরিতে বর্তমানে জীবন যাপন করা একেবারেই অসম্ভব। গত ২০০৭ ইং সালে ওজোপাডিকোতে ২,৭২৬ জন জনবলের সেটআপ অনুমোদন ছিলো। তখন গ্রাহক সংখ্যা ছিলো মাত্র ৫ লক্ষ। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ। যেখানে জনবল তিন গুণ হওয়ার কথা সেখানে লোকবল কমিয়ে ১,৯৬৯ জন করা হয়েছে। মৃত্যু বা অবসরজনিত কারণে কোম্পানির বর্তমানে প্রায় ১,৫০০ স্থায়ী জনবল রয়েছে। রাজস্ব খাতের কার্যক্রম ও গ্রাহক সেবা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে পিচরেট শ্রমিকরা এবং কারিগরি শাখার পর্যাপ্ত সংখ্যক কারিগরি কর্মচারী না থাকায় পিচরেট শ্রমিক ও বহিরাগত লাইন সাহায্যকারী (গ্যাটিস) দিয়ে কারিগরি সকল শাখার সকল ধরনের অভিযোগ মেরামত করানো হয়। পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবল না থাকায় রাজস্ব আদায় সহ সকল কর্মকান্ডের সাথে পিচরেট শ্রমিকরা সম্পৃক্ত থেকে কার্যক্রম চলমান রাখায় কোম্পানির সিস্টেম লস ও রাজস্ব আদায়ে সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে এবং কোম্পানি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় গত ২৪/০৫/২০১১ হতে অসংখ্যবার সর্বশেষ ১৯/০৫/২০২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত পিচরেট শ্রমিকদের বয়সসীমা শিথিল করে কোম্পানির বিদ্যমান শুন্য পদের বিপরীতে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আবেদন পত্র দাখিল করা হলেও আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি বরং অত্র কোম্পানিতে অনেক দপ্তরে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করে পিচরেট শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়ে এবং বাকি দপ্তর গুলোতে প্রিপেইড মিটার দ্রুত স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালের ১২ নভেম্বর পিচরেট শ্রমিক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ এপ্রিল ১৯৮৫ সালে পিচরেট শ্রমিকদের নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিলো। তাই আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন ওজোপাডিকোতে কর্মরত পিচরেট শ্রমিক ও লাইন সাহায্যকারী (গ্যাটিস)-এর বয়সসীমা শিথিল করে শূন্যপদের বিপরীতে চাকুরী স্থায়ীকরণ করে বৈষম্য দূরীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।