সাতক্ষীরার তালায় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর’২৪) বেলা ১২ টায় প্রদান করা উক্ত স্বারকলিপিতে জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় পদায়ন স্থগিত রেখে শিক্ষা প্রশাসনের কাজে দক্ষ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের চলতি দায়িত্ব প্রদান ও একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনসহ ৫ দফা দাবী জানানো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জগদীশ হালদার। মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সজীবুদৌল্লার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতা মোঃ সাইফুল্লাহ, হাসিবুর রহমান হাসিব প্রমুখ।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর ৫ দফা দাবী তুলে ধরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উক্ত স্মারলিপির প্রস্তাবনাসমূহ হলো- ১। মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ৯৭% বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা জাতীয়করণ করা অত্যন্ত জরুরী। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা, একই পাঠ্যপুস্তক ও একই বোর্ডের আওতায়পরীক্ষা হলেও সরকারি ও বেসরকারির মধ্যে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার বৈষম্য শিক্ষার গুনগতমান উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। তাই শিক্ষার সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রাণের দাবী হলো মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ। এটি নিশ্চিত করলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাবে এবং শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি পাবে যা আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২। শিক্ষা বিভাগের দুই টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একাডেমিক ও প্রশাসনিক।শিক্ষকেরা একাডেমিক কাজে দক্ষ, পেডাগোজি কেন্দ্রিকপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। অন্যদিকে ৩১ (একত্রিশ) বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের প্রশাসনিক দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ রয়েছে। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্রের, তাদের কাজের ধরণ ও চর্চা ভিন্ন। যদি শিক্ষকরা প্রশাসনে অনভিজ্ঞ হন, তবে তা বিশৃংখলা সৃস্টি করবে। তাই, উভয় পেশার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও পরস্পর পরিপূরক হিসেবে কাজ করা উচিৎ যাতে দেশের শিক্ষা উন্নত হতে পারে। ৩। উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ (একত্রিশ) বছরের শিক্ষা প্রশাসনের কাজে দক্ষত সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেড অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোর দাবী জানাচ্ছি। ৪। শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ১০-২২ বছরের দক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত সেসিপ জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। ৫। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত। স্কুল, মাদ্রাসা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলির মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগি করতে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। কমিশন শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরি করবে, যা তাদের মর্যাদা ও প্রেষণা বৃদ্ধি করবে। এছাড়া উপজেলা থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শ্ক্ষিা অধিদপ্তর পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসন কিভাবে চলবে তা স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সংস্থাগুলোর কার্যক্রম কিভাবে সমন্বয় হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করবে।