সাতক্ষীরায় অর্থপেডিকস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া দুই গ্রাম ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ভুল চিকিৎসায় পুঙ্গ হওয়া অসহায় নারীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর ‘২৪) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোত্তালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, সুলতানপুর গ্রামের ছেফা গাজীর পুত্র মনোয়ারা খাতুন। আমি একজন অসহায় স্বামী পরিত্যাক্ত নারী। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা হাটের মোড়ে এক্সিডেন্ট করে মারাত্মকভাবে আহত হই। এক্সেরে করে দেখি আমার বাম পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। পরবর্তীতে হাড় বিশেষজ্ঞ ডা: সমীর কুমার দাস এর খোজ খবর করতে থাকাকালিন সময়ে কালিগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের রেজাউল বিশ্বাসের পুত্র বর্তমানে শহরের কাটিয়ামাঠপাড়ার বাসিন্দা গ্রাম ডাক্তার মো: মাসুম বিল্লাহ’র সাথে দেখা হয়। সে সময় তিনি নিজেকে একজন বড় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে আমার নাম ও নাম্বার গ্রহণ করেন। তিনি বলেন সমীর কুমার দাশের চেয়ে একজন বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন। ১ সপ্তাহ পরে তিনি আমার কাছে এসে বলেন, “ তোমার পায়ের অপারেশন করতে হবে, দেড় লক্ষ টাকা খরচ হবে।” সে সময় হুমায়ুন কবিরের মাধ্যমে তার কাছে ৪৫ হাজার টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে বাকী টাকা দিয়ে সর্বমোট দেড় লক্ষ টাকা প্রদান করি। পরে ৬ নভেম্বর ২২ তারিখে হার্ট ফাউন্ডেশন এন্ড ইনটেনসিভ কেয়ার হাসপাতালে আমাকে নিয়ে যান গ্রাম ডাক্তার মাসুম বিল্লাহ। সেখানে উপস্থিত থাকা গ্রাম ডাক্তার দেবহাটার বহেরা গ্রামের ফট্টুর পুত্র বর্তমানে মধুমোল্লারডাঙ্গী পলাশপোলের গ্রাম ডাক্তার মো: বাবু নিজেকে অর্থপেডিকস ডাক্তার পরিচয় দেয়। পরে আমার পা অবশ করে। পরের দিন জ্ঞান ফিরলে আমার শরীরে জ¦ালা যন্ত্রনা ও ফোলাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। সে সময় এক্সরে করে দেখি পায়ে ঢুকানো নাট বল্টু, রড স্টিলের পাত ও প্লেট খোলা। তখন ওই গ্রাম ডাক্তার মাসুম বিল্লাহকে জানালে তিনি দেখে বলেন আবারো অপারেশন করতে হবে। ২য় দফায় আবারো হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে আমার অপারেশন করা হয়। এরপর আবারো এক্সেরে করে দেখি হাড় জোড়া লাগেনি। ফলে আমি চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছি। এরপর অর্থপেডিকস ডাক্তার ডা: হাফিজউল্লাহ ও ডাক্তার সমীর কুমার দাশ কে দেখালে তারা বলেন দুইবার অপারেশন করা হয়েছে। এরপর অপারেশন করলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। সঠিক সময়ে আসলে হয়তো হাড় জোড়া লাগানো যেত। এখন আর সম্ভব হবে না। রোগী পঙ্গু হয়ে গেছে। শুরুতেই ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমি একজন গরিব অসহায় মানুষ। তাদের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে সরকার ঘরটিও বিক্রয় করতে হয়েছে। অথচ আমি সুস্থ্য হতে পরেনি। উল্টো চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছি। আমি ওই প্রতারক গ্রাম ডাক্তারদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।