সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভনে গ্রহণ করা ৫ লক্ষ টাকা ফেরত না দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতারক রঞ্জন দেবনাথ ওরফে মিন্টু কর্তৃক চাকুরি প্রার্থীও বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর’২৪) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কালিগঞ্জ উপজেলার কামরপুর গ্রামের কান্তিলাল দেবনাথের ছেলে ভুক্তভোগি চাকুরি প্রার্থী রাজকুমার দেবনাথ এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পড়াশোনা শেষ করে চাকুরি না পেয়ে হতাশ জীবন যাপন করছিলাম। এসময় পাশ্ববর্তী বামনহাট গ্রামের মৃত অমল দেবনাথের ছেলে রঞ্জন দেবনাথ মিন্টু আমাকে সাতক্ষীরার ডিসি অফিসে অফিসসহায়ক পদে চাকুরির প্রলোভন দেখায়। এজন্য তিনি ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। বিষয়টি আমার বাবাকে জানালে তিনি জমি বিক্রি করে ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর ইসলামী ব্যাংক বালিয়াডাঙ্গা শাখার ৫ লক্ষ টাকার একটি চেক রঞ্জন দেবনাথ মিন্টুর কাছে দেয়। পরদিন ১৯ নভেম্বর ইসলামী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা থেকে চেক ভাঙিয়ে মিন্টু সব টাকা তুলে নেন। কিন্তু ডিসি অফিসের নিয়োগ সম্পন্ন হলেও আমার চাকুরি হয়নি। পরে মিন্টুর কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি বিভিন্নভাবে তালবাহানা করতে থাকেন।
পরবর্তীতে মিন্টু তার সহযোগী আশাশুনির কামালকাটি গ্রামের ডা: অরবিন্দু বিশ্বাসের ছেলে পলাশ কুমার বিশ্বাসের নামীয় ৪ লক্ষ টাকার অগ্রণী ব্যাংক সাতক্ষীরার একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু ওই চেক নিয়ে একাধিকবার ব্যাংকে গেলেও তার হিসাবে কোন টাকা না থাকায় চেক ভাঙানো য়ায়নি। ইতোমধ্যে চেকটি ব্যাংক থেকে ডিজঅনার হয়েছে। এরপর থেকে মিন্টুকে না পেয়ে আমার পিতা উপায়ন্তর হয়ে বিষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
রাজকুমার দেবনাথ আরো বলেন, চেয়ারম্যান মিন্টুকে তার কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ করলেও সে হাজির হয়নি। একপর্যায় গত ৭ সেপ্টেম্বর রঞ্জন দেবনাথ মিন্টু তার গ্রামের বাড়িতে গেলে তাকে পরিষদে ডাকেন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। পরিষদে হাজির হয়ে মিন্টু এখুনি টাকা না থাকার কথা জানিয়ে স্বেচ্ছায় তার ব্যবহৃত সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেলটি জমা রেখে আগামী ১ মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে মোটরসাইকেল ফেরত নিয়ে যাবো বলে জানায়। এসময় নিজে থেকেই সে একটি ডিভিও জবাববন্দি দেয়। যেটি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনার পর মিন্টু সাতক্ষীরা শহরে এসে পরের দিন ৮ সেপ্টেম্বর একটি মিথ্যে সংবাদ সম্মেলন করে। অথচ রঞ্জন দেবনাথ মিন্টু আমার পিতার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে স্বেচ্ছায় লিখে দিয়েছেন। এছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের শর্তে তার মোটরসাইকেলটি চেয়ারম্যানের কাছে জমা রেখে যান এবং নিজেই স্বীকারোক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এবিষয়ে তাকে কোন প্রকার জোর যবরদস্তি করা হয়নি। অথচ আমাদের টাকা ফেরত না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই চক্রান্ত করে মিথ্যে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে মিন্টু।
তিনি প্রতারক রঞ্জন দেবনাথ মিন্টুসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে ৫ লক্ষ টাকা উদ্ধারপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।