সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ডাংনলতা গ্রামের আব্দুল গফ্ফরকে গুলি করে হত্যা ও শহরের সুলতানপুরের সাইফুল ইসলামকে দুই পায়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরের আব্দুল ওহাবের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে আজ রবিবার (০৮ সেপ্টেম্বর ‘২৪) তৎকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরসহ ৪৭জনের নামে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, তালা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর ছিদ্দিক, কলারায়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালিন সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু, কলারোয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাজাদা, সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যন আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদ, যুবলীগ নেতা ওয়াহেদ পারভেজ, সদর উপজেলা আওয়ামী লেিগের সভাপতি আব্দুর রশিদ, ধুলিহর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বাবু সানা, জেলা সৈনিক লীগের সভাপতি বাবু খান, কুশখালি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ, ফিংড়ি ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান সামছুর রহমান, বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ পরিচালক শহীদুল ইসলাম. কালিগঞ্জ উপজেলার বন্দকাটি গ্রামের কেরামত আলী মোড়লের ছেলে কুখ্যাত হরিণ শিকারী সাত্তার মোড়ল, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাধু, জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেল এবং ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা সদরের আশরাফুল ইসলাম।
মামলার বিবরনে জানা যায়, মামলার বাদির পিতা একজজন পুলিশ সদস্য। বাদি চারটি নাশকতা মামলা, ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যা ও দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক স.ম আলাউদ্দিন হত্যা মামলার আসামী। ২০১৪ সালের ২৬ মে দিবাগত রাত একটার দিকে সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানের নির্দেশে বাদি সাইফুল ইসলামকে বাসা থেকে চোখে কাপড় বেঁধে তালা থানার ট্যাংরা বিলের ভেড়ির উপর আনা হয়। চোখের উপর বাধা কাপড় খুলে দেওয়ার পর সেখানে বাদি তার কাছের লোক বলে পরিচিত তালা উপজেলার ডাংনলতা গ্রামের আবু বক্কর পাড়ের ছেলে আব্দুল গফ্ফার পাড়কে চেঁাখ বঁাধা ও পিঠ মোড়া অবস্থা দেখতে পান। সেখান থেকে আসামীরা তাদের দুইজনকে পিকআপে তুলে সদর থানাধীন ঋ’শিল্পীর পাশে ফাঁকা বিলে নিয়ে আসেন। সেসময় পুলিশ গফ্ফারের বুকে রাইফেল দিয়ে গুলি করে। গুলি করা হয় বাদি সাইফুলের দুই পায়ের হাঁটুতে। পরে সাইফুল ও গফ্ফারের লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সাইফুলকে ভর্তি করা হয় সদর হপসাতালে। তার পা কেটে ফেলার জন্য ডাক্তারকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। বসানো হয় মেডিকেল বোর্ড। পরে বাদিকে খুলনা ৫০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাদির নামে হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা দেওয়া হয়। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে গফ্ফারের লাশের ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তৎকালিন সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকুলে আসায় এ মামলা দায়ের করা হলো।