বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও সাতক্ষীরা-১ (তালা ও কলারোয়া) আসনের সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেছেন, আমার কাজের মূল্য তালা-কলারোয়ার জনগণ দিয়েছে, আমি কৃতজ্ঞ, আমি চিরঋণী। এই তালার উন্নয়ন হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে আমার নেতৃত্বে। তাই আপনাদের থেকে আমাকে কেউ বিছিন্ন করতে পারিনি, আর পারবেও না। চেয়েছিলাম, হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ। সেটি সম্ভব হয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে। এরপর থেকে শেখ হাসিনার নাম বাংলার মাটিতে কেউ রাখবে না।
আজ শনিবার (৭ সেপ্টম্বর) বিকালে তালা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে পাটকেলঘাটা কুমিরা হাইস্কুল মাঠে সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকার পরিবর্তনের পর শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার মামলায় ৭০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগের পরে ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগার থেকে মুক্তি পান তিনি। শনিবার প্রথম তাঁর নির্বাচনী এলাকা সাতক্ষীরার তালায় আসেন। নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর নিয়ে ঢাকা থেকে সড়ক পথে আসেন এবং ডুমুরিয়া উপজেলার চুকগনগর বাজার থেকে তাকে বরণ করে নিতে উপস্থিত ছিলেন নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ। চুকগনগর বাজার থেকে মটরসাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে কুমিরা হাইস্কুল মাঠে তাঁকে নিয়ে আসেন।
সাবেক এমপি হাবিব আরো বলেন, ছাত্র জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের ফলে আজ দেশ স্বাধীন। তরুণ ছেলেদের জীবনের বিনিময়ে আজ এ নতুন দেশ। তিনি বলেন , ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, এরশাদ মুক্ত আন্দোলন, সবশেষ হাসিনা মুক্ত আন্দোলন করেছে এই ছাত্ররা সে জন্য তাদেরকে সম্মান করি।
তিনি বলেন, বিডিআর হত্যার বিচার সহ এই জালিম সরকারের আমলের সকল অন্যায় অত্যাচারের বিচার হবে। আপনাদের ভালোবাসার ঋণ পরিশোধ করতে জীবন-মরণ সাক্ষী রেখে এ দেশে পড়ে ছিলাম। আপনাদের ভালোবাসা থেকে আমাকে কেউ ছিন্ন করতে পারেনি। তাই আপনাদের কাছে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, চেয়েছিলাম, হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ। হাসিনার নাম বাংলার মাটিতে কেউ রাখবে না। তবে কাউকে নির্যাতন করা যাবে না, মিথ্যা মামলা দেওয়া যাবে না। তারুণ্যের উচ্ছাস তারেক রহমানকে আবার এদেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমার কাজের মূল্য তালা-কলারোয়ার জনগণ দিয়েছে, আমি কৃতজ্ঞ, আমি চিরঋণী। আমি কলারোয়ার সন্তান হয়েও বিনা ভোটের এমপি হয়নি- হয়েছে স্বপ্নন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মৃণাল কান্তি রায়ের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক,অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু,খুলনা মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কার্যনিবার্হী সদস্য মো. আলাউদ্দিন, এ্যড. জাহানারা পারভীন বকুল, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল হাসান, উপজেলা বিএনপি’র য্গ্মু সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশারফ হোসেন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মির্জা আতিয়ার রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বিকেল চারটায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হলেও দুপুরের আগেই নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে সমবেত হতে থাকেন। বেলা তিনটার মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থল লোকেলোকারণ্য হয়ে যায়। পর্যালোচনা করলে ১৫ বছর পর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি। এ কারণে নেতা-কর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ¡াস নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় গণসংবর্ধনায় জনস্রোত পরিনত হয়।