সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। স্বাধীনতা পরবর্তী নানা আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথের লড়াকু সৈনিকের মত ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আ’লীগের দুর্দিন-দূর্বিপাকে সবসময় ছিলেন কর্মী সমর্থকদেও পাশে। দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্টে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়িছেন নিঃস্বার্থচিত্তে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শিক্ষিত মার্জিত এই মানুষটি হতে চান নৌকার কান্ডারী। ইতিমধ্যে সেই পরিকল্পনা নিয়ে গণসংযোগসহ আ’লীগের কর্মী-সমর্থকদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৫০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী জন্ম গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। ১৯৬৯ সালে ৬ দফা আন্দোলন ও ছাত্র সমাজের ১১ দফার ভিত্তিতে গণআন্দোলনে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক হিসাবে অংশ গ্রহণ করেন। ছাত্র থাকাবস্থায় তিনি ১৯৬৯-১৯৭০ সালে যশোর সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আ’লীগের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করে যশোর জেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৭১ সালে প্রয়াত যুবনেতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির নির্দেশে ভারতের উত্তর প্রদেশের চাকরাতা (টেন্ডুয়া) সামরিক ঘাটিতে মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠান। সেসময় বঙ্গবন্ধুর দুই সন্তান শহীদ শেখ কামাল ও শেখ জামালের সাথে ৫ম ব্যাচে প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে যশোর-সাতক্ষীরা অঞ্চলে গেরিলা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪-৭৫ সালে ছাত্রলীগের ব্যানারে যশোর সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বিএ অনার্স এবং ১৯৭৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য কর্মীদের সংগঠিত করার চেষ্টাকালে তিনি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। প্রায় এক বছর কারাভোগের পর ১৯৭৬ সালের ২৬ জুলাই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তিলাভ করেন। ১৯৮৩ সালে সাতক্ষীরা সিটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০১৪ সালে একই কলেজ থেকে অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি পরিবহন ব্যবসা ও সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত। এছাড়া তিনি সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাতক্ষীরা জেলা শ্রমিক লীগের আহবায়ক আব্দুল্লাহ সরদার বলেন, ১৯৭৫ সালের পর সামরিক শাসক, জেনারেল জিয়া, স্বৈরাচারি এরশাদ, খালেদা- নিজামী সরকার বিরোধী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আ’লীগের ঘোষিত রাজনৈতিক কর্মসূচীতে স্বশরীরে অংশ গ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ স্যার। যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ও কাদের মোল্লাসহ যুদ্ধাপরাধী মামলার রায় পরবর্তী ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারি থেকে জামায়াতের নাশকতার ভয়াল ঘটনা সমূহ মোকাবেলা করতে তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করেন এই সাতক্ষীরা শহরেই। তিনি মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে জামায়াত শিবির ক্যাডারদের বিরুদ্ধে মিছিল, মিটিংসহ বিভিন্ন সমাবেশে অংশ গ্রহণ করে সবসময় দলকে চাঙ্গা রেখেছিলেন। উত্তাল সেই দিনগুলোতে জেলা শহরে আর কোন নেতা ঘর থেকে বের না হলেও অধ্যক্ষ আবু আহমেদ রাজপথেই পড়ে ছিলেন দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে। দলের দুর্দিনে যিনি ছিলেন দলের জন্য ঢাল তিনি চেয়ে বা জোর করে কোনকিছুই আদায় করে নেননি দলের থেকে। ছাড় দিতে দিতে তিনি দলের জন্য সবকিছু ছেড়েই দিয়েছেন। পরপর তিন তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা- ২ আসনে মনোনয়ন চেয়েও দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশে বসে যান।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্ততপক্ষে একবার আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন তাকেই দেবেন দলের হাই কমান্ড এমনটাই প্রত্যাশা করেন দলের নেতাকর্মীসহ সাতক্ষীরাবাসী।