সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকুলবর্তী দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ৯নং সোরা গ্রামে রবিবার ভোরে খোলপেটুয়া নদীর ভয়াবহ নদী ভাঙনে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে হাজারো পরিবার।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, পানীয় জলের সংকট নিরসনে ২০০৩ সালে আগে সরকারি অর্থায়নে গাবুরার সোরায় তৈরি করা হয় দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প। রবিবার ভোরে সোরার দক্ষিণাংশে খোলপেটৃয়া নদীর ২০০ মিটার বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়। নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ায় বাঁধ ক্রমশঃ চিকন হতে শুরু করে। ফলে ওই এলাকার হাজারো গ্রামবাসি ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলায় গাবুরাসহ শ্যামনগরের দক্ষিণাঞ্চল প্লাবিত হয়। এরপরও।অক্ষত ছিলো দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প। কিন্তু গত রবিবার ভোরে খোলপোটুয়া নদীর সোরা দক্ষিণাংশে ভয়াবহ নদী ভাঙন শুরু হয়। ফলে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প। এতে ২০০৩ সালে নির্মিত প্রকল্পটি বিলিন হয়ে যেতে পারে যে কোন সময়। গত ২০১৯ সাল থেকে কয়েকবার নদী ভাঙন হলেও সরকারিভাবে বাঁধ নির্মাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেড়িবাঁধের বাহিরে নদীর চরে স্থাপনা হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কৌশলে দায়িত্ব এড়িয়ে যান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গ্রামবাসি ও মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণের অর্থায়নে এর আগে বাঁধ নির্মাণ করা হলেও বড় ধরণের সহায়তা না পেলে গাবুরাবাসীকে বিপদের হাত থেকে ব৭াচাপনো যাবে না।
সরেজমিনে রবিবার বিকেলে সোরা গ্রামে যেয়ে দেখা গেছে খোলপেটুয়া নদীর অববাহিকায় অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প। প্রকল্পের সীমানা রাস্তার ভিতরে তিনদিকে খাল, ফসলী জমি, শতাধিক নারিকেল গাছসহ নানা জাতের ফলজ ও বণজ বৃক্ষ, গাবুরার বৃহত্তম খাবার পানির পুকুর, সাইক্লোন শেল্টার কাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জামে মসজিদ, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও সরকারি কবরস্থান রয়েছে। ২০০৩ সালে দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্কের আদলে সরকারিভাবে নদীর চরে তৈরি করা হয় এই স্তাপনা। গ্রামের মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা খাবার পানির কষ্ট মেটাতে জনদাবির মুখে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা তৈরি হয়। ২০০৯ সালে গাবুরা প্লাবিত হলেও দৃষ্টিনন্দন অক্ষত থাকে। কয়েক হাজার পরিবার এখান থেকে খাবার পানি হিসেবে পুকুরের পানি পান করে তাদের জীবন বাঁচায়।
গাবুরা ইউপি সদস্য মঞ্জুর হোসেন ও গ্রামবাসি মোহাম্মদ কবীর হোসেন জানান, এই মুহর্তে ভাঙন প্রতিরোধ করা না গেলে প্লাবিত হতে পারে প্রকল্পের ভিতর সকল প্রতিষ্ঠান ও গাবুরার সবচেয়ে বড় সুপেয় পানির আঁধারটি। দৃষ্টিনন্দনের রাস্তা প্লাবিত হলে সমগ্র গাবুরা প্লাবিত হতে পারে। কারণ বেড়িবাঁধটির দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় অনেক নীচু হয়ে গেছে।