সাতক্ষীরায় করোনা সংক্রমনের হার বেড়েই চলেছে। তবে লকডাউন চলছে ঢিলে-ঢালাভাবে। এদিকে সদর হাসপাতালে করোনা ছড়ানোর হটস্পট হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সচেতন মহল।
সাতক্ষীরায় দ্বিতীয় দফা লকডাউনের দ্বিতীয় দিন রবিবার জেলাব্যাপী এই লকডাউন চলছে ঢিলে-ঢালা ভাবে। অন্যান্য দিনের মত পুলিশের কড়া নজরদারির দেখা মেলেনি। ফলে জনসমাগম অন্যান্য দিনের তুলনায় বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। লকডাউনের নির্দেশনা না মানায় মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে হাট-বাজারগুলোতে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘন্টায় ৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমনর হার ৬৪ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগের দিনে সংক্রমণের হার ছিল ৩৬ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় করোনায় মারা গেছে ৫১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও সদর হাসপাতালে মারা গেছে একজন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা: জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, জেলায় এ পর্যন্ত পজিটিভ সনাক্ত হয়েছেন দু’হাজার ৬৪৪ জন। বর্তমানে জেলাজুড় ছয় শত ৮৩জন করোনা রোগী সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল, বিভিন ক্লিনিক ও বেসরকারী হাসপাতালসহ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। দু’হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি আছেন ৬৯ জন। তার মধ্যে আইসিইউতে আছেন ৫ জন।
অপরদিকে করোনা এবং সাধারণ রোগী মিলে-মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। একই অবস্থা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে। প্রশাসনিক তৎপরতায় রাস্তার মানুষ অনেকটা ঘরমুখা হলেও জনসমাগম ব্যাপকভাবে বাড়ছে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সামনে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অবস্থাও একই।
এছাড়া, সাতক্ষীরার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ইচ্ছামত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীসহ সাধারণ রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। এর ফলে সেখানকার পরিস্থিতিও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডা: অসীম সরকার জানান, কোভিড নিয়ে সাতক্ষীরা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে আছে। আমরা আশা করছিলাম, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হলে করোনার ঝুঁকি কম হবে। কারণ সেটা লোকালয়ের বাইরে। কিন্তু সদর হাসপাতালে কোভিড রোগী ভর্তির পর নিয়ন্রণ না থাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, করোনার প্রথম চিকিৎসা অক্সিজেন কিন্তু এখানে অক্সিজেন নেই, হাইফ্লো নাজাল ক্যানুলা নেই, নেই আইসিইউ। অথচ রোগী ভর্তির পর বোতল অক্সিজন খুবই কম কাজ করবে। সেক্ষেত্রে ঝুঁকিই থেকে যাবে রোগী এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।