সাতক্ষীরায় আজ রোববার থেকে আম ভাঙা শুরু হয়েছে। প্রথমেই ভাঙা হচ্ছে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ আম। পর্যায়ক্রমে ভাঙা হবে আম্রপালি ও ল্যাংড়া আম। উৎপাদন মোটামুটি ভাল হলেও দামে খুশী নন চাষিরা। তবে আমের মান বজায় রাখতে তৎপর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৫ হাজারেরও বেশি বাগানে আম চাষ হয়েছে। ১৩ হাজার ১শ’ জন চাষি এই আম চাষ করেছেন। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিকটন। আর ৫শ’ হেক্টর জমিতে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ আম চাষ করা হয়েছে। আম উৎপাদনের টার্গেট পূরণ হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
আবহাওয়া ও মাটির গুনে অন্যান্য স্থানের তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। দাম পাওয়ার আশায় অনেকেই তাই কাঁচা আম পাড়েন। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আগে থেকেই আম ভাঙার তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। নির্ধারণ করে দেয়া তারিখ অনুযায়ী রোববার থেকে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ আম ভাঙা হচ্ছে। তবে প্রথম দিনে আমের দামে সন্তুষ্ট নন চাষিরা। সুলতানপুর বড়বাজারে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ আমের দাম গড়পড়তায় মণপ্রতি ১ হাজার ৮ শ’ থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে, চাষীরা বলছেন ন্যুনতম মলপ্রতি দাম ২ হাজার ৮ শ’ টাকা বিক্রি না হলে তাদের লোকসান হবে।
সদর উপজেলার শাল্যে গ্রামের আম চাসী ওমর আলী জানান, তার ৫বিঘা জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৬/১৭ টি গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ আম গাছ রয়েছে। আশা করছি প্রতি বিঘা জমিতে ১শ’ মণ আম পাবো।
বড়বাজারের আম ব্যবসায়ী লিয়াকত হোসেন জানান, আজকে যেহেতু প্রথম আম আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি হচ্ছে,তাই বাজার দর একটু কম। কয়েকদিনের মধ্যে বাজার চড়া হবে বলে জানান তিনি। সুলতানপুর বড়বাজারে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ আমের দাম গড়পড়তায় মণপ্রতি ১ হাজার ৮ শ’ থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সুণতানপুর বড়বাজার কাঁচা-পাকা মাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানান, সরকারি বিধি প্রতিপালনের কিছুটা দায়িত্ব আমাদের রয়েছে। আমরা ঘোষণা দিয়েছি, গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ আম ছাড়া অন্যকোন আম যদি কেউ বড়বাজারে নিয়ে আসে,তবে আমরা সে আম নষ্ট করে দেব। এছাড়া কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকানোর বিষয়েও সতর্ক রয়েছি আমরা।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নূরুল ইসলাম বলেন, বাইরে থেকে যারা আম কিনতে আসবেন, তাদেরকে কমপক্ষে তিন দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। এছাড়া আম চাষিদের সুবিধার্থে ২১ মে হিমসাগর, ৪ জুন আম্রপালি ভাঙার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এবছর এখনো সাতক্ষীরায় ঝড়-বর্ষা হয়নি। তাপদাহে আম কিছুদিন আগে থেকে পরিপক্ক হয়েছে। তাই ভাঙার তারিখও এগিয়ে আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, সুলতানপুর বড়বাজারসহ বিভিন্ন আমের মোকামে প্রশাসনিক নজরদারি রাখা হয়েছে। রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে আম পাঁকালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া আম সিন্ডিকেট যাতে গড়ে উঠতে না পারে,সে বিষয়েও নজরদারি রয়েছে।